এই পৃথিবীতে কলমের আবিষ্কারের ইতিহাস
✒️ এই পৃথিবীতে কলম আবিষ্কারের ইতিহাস ✒️
🔶 ভূমিকা:
মানুষ যখন থেকে জ্ঞান লিপিবদ্ধ করতে শিখেছে, তখন থেকেই লেখার যন্ত্রের প্রয়োজনীয়তা শুরু হয়েছে। কাগজ ও লেখার উপকরণ মানব সভ্যতার অগ্রগতির অন্যতম স্তম্ভ। কলম—একটি ছোট্ট বস্তু হলেও, এটি সভ্যতা নির্মাণে বিপুল অবদান রেখেছে। চলুন জেনে নেওয়া যাক কলমের ইতিহাস।
🔶 প্রাচীন যুগের লেখার উপকরণ:
- মেসোপটেমিয়া: খ্রিষ্টপূর্ব প্রায় ৩০০০ সালে মেসোপটেমিয়ার মানুষ কাদামাটির ফলকে খোদাই করে লিখত। তারা ব্যবহার করত শলাকা জাতীয় বস্তু।
- মিশর: মিশরের লোকেরা প্যাপিরাস গাছ থেকে কাগজ তৈরি করত এবং বাঁশ বা নলজাতীয় কাঠি দিয়ে কালি ব্যবহার করে লিখত।
- ভারত: প্রাচীন ভারতে তালপাতা বা ভোজপত্রে তামা বা লোহার ছোঁয়া দিয়ে লেখা হতো।
🔶 কলমের বিবর্তন:
- পাখির পালক কলম (Quill Pen): খ্রিষ্টীয় ৬ষ্ঠ শতকে ইউরোপে পাখির পালক ব্যবহার করে কলম তৈরি করা হতো। একে বলা হতো "Quill"। এটি ডুবিয়ে কালি দিয়ে লেখা হতো।
- ডিপ পেন (Dip Pen): ১৯ শতকে ধাতব নিবযুক্ত ডিপ পেন জনপ্রিয় হয়, যা কালি-পাত্রে ডুবিয়ে ব্যবহার করা হতো।
- ফাউন্টেন পেন (Fountain Pen): ১৮৮৪ সালে Lewis Waterman আধুনিক ফাউন্টেন পেন আবিষ্কার করেন, যার নিজস্ব রিজার্ভার ছিল কালি রাখার জন্য।
- বলপয়েন্ট পেন (Ballpoint Pen): ১৯৩৮ সালে হাঙ্গেরিয়ান সাংবাদিক László Bíró বলপয়েন্ট পেন উদ্ভাবন করেন, যা এখন পৃথিবীর সর্বাধিক ব্যবহৃত কলম।
- জেল পেন ও রোলারবল: আধুনিক যুগে এসে দ্রুত শুকানো এবং মসৃণ লেখার সুবিধায় জেল ও রোলারবল পেন খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
🔶 কলম শুধু লেখার যন্ত্র নয়:
কলম শুধু লেখার যন্ত্র নয়, এটি এক একটি বিপ্লবের হাতিয়ার। কলমের মাধ্যমে লেখা হয়েছে কবিতা, সাহিত্য, ইতিহাস, আইন ও বিজ্ঞান। বলা হয় — "তলোয়ারের চেয়ে কলম শক্তিশালী" — কারণ জ্ঞান ও চিন্তার মাধ্যমে সমাজকে বদলে দেওয়ার ক্ষমতা কলমেরই রয়েছে।
🔶 উপসংহার:
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কলমের রূপ ও রঙ পাল্টেছে, তবে তার গুরুত্ব কখনও কমেনি। আজও কলম শিক্ষার প্রতীক, সভ্যতার ধারক, এবং চিন্তার বাহক। ভবিষ্যতে হয়তো ডিজিটাল পেন বা আরও উন্নত প্রযুক্তি আসবে, তবুও কলমের ঐতিহাসিক গুরুত্ব থাকবে অম্লান।
✍️ লেখক: নিতাই বাবু
🏆 পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্লগার | নাগরিক সাংবাদিক, ব্লগ ডট বিডিনিউজটুয়েন্টিফোর ডটকম
🤝 সহযোগিতায়: ChatGPT OpenAI
Comments
Post a Comment