চার্টজিপিটি ব্যবহার করে কি সবকিছু সমাধান করা সম্ভব
চার্টজিপিটি ব্যবহার করে কি সবকিছু সমাধান করা সম্ভব?
লেখক: নিতাই বাবু
পুরস্কারপ্রাপ্ত নাগরিক সাংবাদিক, ব্লগ ডট বিডিনিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকম
সহযোগিতায়: ChatGPT, OpenAI
ভূমিকা
যুগ পাল্টাচ্ছে, প্রযুক্তিও পাল্টাচ্ছে। এক সময় কাগজে কলমে যা লিখতাম, আজ তা লিখে দিই কম্পিউটারে। আর এখন তো কেবল প্রশ্ন করলেই এক ঝলকে চলে আসে উত্তর—সেটাও একেবারে মানুষের মতো ভাষায়, পরিপাটি করে সাজানো। এই অভাবনীয় পরিবর্তনের পেছনে রয়েছে একটি নাম—ChatGPT।
তবে প্রশ্ন উঠছে—এই অসাধারণ প্রযুক্তিটি দিয়ে কি সত্যিই সবকিছু সমাধান করা সম্ভব? আমরা কি একে শিক্ষক, ডাক্তার, আইনজীবী, সাংবাদিক—সব কিছু বানিয়ে ফেলছি? নাকি এরও সীমা আছে? এই লেখায় আমরা খুঁজে দেখব ChatGPT-এর ক্ষমতা, প্রভাব, সম্ভাবনা ও সীমাবদ্ধতার দিকগুলো।
মূল লেখা
প্রযুক্তির অগ্রগতি: হাতের মুঠোয় জ্ঞান
OpenAI-এর তৈরি ChatGPT এখন শুধু একটা ওয়েবসাইট নয়, বরং হয়ে উঠেছে একটি সহায়ক শক্তি—জীবনের নানা ক্ষেত্রে।
আপনি যদি লেখক হন, ChatGPT গল্প বা প্রবন্ধ লিখে দিতে পারে।
আপনি যদি শিক্ষার্থী হন, এটি জটিল কোনো বিষয় সহজ করে ব্যাখ্যা করতে পারে।
আপনি যদি প্রোগ্রামার হন, এটি কোড খুঁজে দিতে পারে।
এমনকি এটি কবিতা লেখে, রেসিপি দেয়, চিঠি লিখে, চাকরির জন্য সিভি বানায়!
যার ফলে অনেকেই ভাবছেন—এই AI দিয়ে কি তাহলে সব সমস্যার সমাধান করা সম্ভব?
ChatGPT যা পারে—
- তথ্য বিশ্লেষণ ও উপস্থাপন: ChatGPT বিপুল তথ্যভান্ডার থেকে দ্রুত বিশ্লেষণ করে উত্তর দেয়।
- ভাষা ব্যবহার ও সৃজনশীলতা: এটি মানুষের মতো ভাষায় লেখে—গল্প, কবিতা, নাটক, এমনকি বক্তৃতাও।
- শিক্ষা ও সহায়তা: বিভিন্ন শ্রেণির শিক্ষার্থীকে শেখায় গণিত, বিজ্ঞান, ইতিহাসসহ নানা বিষয়।
- প্রযুক্তিগত সহায়তা: কোড লেখা, ডিবাগিং, সফটওয়্যার সমস্যা সমাধানে চমৎকার সহায়ক।
- যোগাযোগ সহায়তা: ইমেইল লেখা, অফিসিয়াল রিপোর্ট তৈরি, সিভি সাজানো প্রভৃতিতে দক্ষ।
তবে ChatGPT যা পারে না—
- বাস্তব অভিজ্ঞতা বা অনুভব: এটি কখনোই মানুষের মতো বাস্তব অভিজ্ঞতা বা অনুভূতি ধারণ করতে পারে না।
- হৃদয়স্পর্শী মানবিক সিদ্ধান্ত: জীবনের অনেক সিদ্ধান্তে আবেগ, মূল্যবোধ ও বিবেক লাগে—যা কেবল মানুষের আছে।
- সঠিকতা ও নির্ভুলতা: ChatGPT অনেক সময় ভুল তথ্য দেয় বা বিভ্রান্ত করতে পারে, কারণ এটি ইন্টারনেটে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে কাজ করে।
- নৈতিকতা ও বিবেক: এটি জানে না ‘ঠিক’ আর ‘ভুল’—যা মানুষ বিচার করে নিজের বিবেক দিয়ে।
- চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ: চিকিৎসা, আইনি পরামর্শ বা অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত—এগুলোতে AI কেবল সহকারী হতে পারে, সিদ্ধান্তগ্রহীতা নয়।
শেষ কথা
ChatGPT আমাদের জীবনে এক নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে। এটি সময় বাঁচায়, দক্ষতা বাড়ায়, চিন্তার গতি বাড়ায়। তবে এটি যেন সহযোগী থাকে, কর্তৃত্বকারী নয়—এই ভারসাম্য রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
যে প্রযুক্তি মানুষের কাজে আসবে, মানুষের বিকল্প হবে না—সেই প্রযুক্তিই টিকবে টেকসই সমাজে। ChatGPT সেই পথেই চলার চেষ্টা করছে, কিন্তু আমাদের ব্যবহারবিধিও হতে হবে সচেতন ও দায়িত্বশীল।
উপসংহার
সব সমস্যার সমাধান হয়তো ChatGPT দিতে পারবে না। কিন্তু সঠিক প্রশ্ন করলে, এটি এমন পথ দেখাতে পারে যা হয়তো আমরা আগে ভাবিনি।
AI একা নয়—মানুষ ও AI মিলেই আগামী ভবিষ্যতের রূপরেখা তৈরি করবে। ChatGPT সে ভবিষ্যতের প্রথম পাঠ্যপুস্তক হতে চলেছে—কিন্তু লেখক থাকবে মানুষই।
✍️ নিতাই বাবু
পুরস্কারপ্রাপ্ত নাগরিক সাংবাদিক
ব্লগার, ব্লগ ডট বিডিনিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকম
সহযোগিতায়: ChatGPT, OpenAI
Comments
Post a Comment